বগুড়ার শেরপুরে করতোয়া নদী যেন বর্জ্যের ভাগাড়!

শেরপুরে করতোয়া নদী যেন বর্জ্যের ভাগাড় – বগুড়ার শেরপুর শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়া একমাত্র নদী করতোয়া। ময়লা-আবর্জনার ভারে এখন মৃতপ্রায় নদীটি। বর্ষাকালে নদীতে পানি প্রবাহমান থাকলেও বছরের বেশিরভাগ সময় পরে থাকে শুষ্ক, পানিহীন। নদীর কোনো কোনো অংশে বর্জ্যরে কারণে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া দূষণ পৌঁছেছে বিপজ্জনক স্তরে।

 

বগুড়ার শেরপুরে করতোয়া নদী যেন বর্জ্যের ভাগাড়!

 

করতোয়া নদীর দূষণ রোধে এতে ময়লা ও আবর্জনাসহ যেকোনো ধরনের বর্জ্য না ফেলার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তা মানছে না কেউ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শেরপুর পৌরসভার বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে শেরপুরের করতোয়া নদীতে।

শহরের সকল বর্জ্য গাড়িতে করে নিয়ে ফেলা হচ্ছে এসব ময়লা-আবর্জনা। যার ফলে ময়লা-আবর্জনার বিশাল স্তূপে পরিণত হয়ে করতোয়া নদীর মাঝ বরাবর পৌঁছেছে। এমনকি নদীর দু’পাশে আবাদি জমি ভরাট করে নিয়মিত গড়ে উঠছে অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও খাবার হোটেল।

 

 

করতোয়া নদীকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করায় তা বিলীনের পথে। এছাড়াও ময়লার ভাগাড়ের কারণে নদীর দুই পাশে বসবাসকারী ওইসব এলাকার মানুষজন দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শেরপুর পৌরসভার দক্ষিণ-পূর্ব পাশে করতোয়া নদীতেই সবচেয়ে বেশি বর্জ্য ফেলা হচ্ছে।

বছরজুড়ে সেখানে রাতদিন বর্জ্য ফেলা হলেও যেন দেখার কেউ নেই। বর্ষা মৌসুমে বর্জ্যগুলো স্রোতে ভেসে যায়। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় শেরপুর হাটখোলার পূর্বপাশে, রণবীরবালা ঘাটপার ব্রিজের উত্তরে ও দক্ষিণ  প্রান্তে বর্জ্যরে পাহাড়ে পরিণত হয়েছে। শহরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মূল দায়িত্ব শেরপুর পৌরসভা।

এ জন্য করতোয়া নদীতে বর্জ্য না ফেলার বিষয়টি তদারকির জন্য আদালত পৌর কর্তৃপক্ষকে নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু এ ব্যাপারে তারা উদাসীন। নদীর দখল ও দূষণ রোধে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষ থেকে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়। কিন্তু আদালতে সেই নির্দেশনা আলোর মুখ দেখেনি।

শেরপুরের সবচেয়ে বড় বাজার সকাল বাজার ও হাটখোলায় ড্রেনের মাধ্যমে জবাই করা গরু-ছাগলের রক্ত, চর্বি, হাড় ও মাংসের টুকরা, হাঁস-মুরগি ও কবুতরের পালক এবং নাড়িভুঁড়ির পাশাপাশি মরা হাঁস-মুরগিও নদীতে ফেলা হচ্ছে। এমনকি মাদ্রাসা গেট ঘাটপার ব্রিজের আশপাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে সেতুর গার্ডারে মরিচা পড়তে শুরু করেছে।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

এ কারণে গার্ডারগুলো দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেতুর নিচ দিয়ে নদীর প্রশস্ত সীমারেখা বোঝা গেলেও নদীতে পানির প্রবাহ এখন জীর্ণ নালার মতো। আর নদীর বুকে অনেক জায়গায় দেখা যায় চাষাবাদও হচ্ছে। শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাদিজ সিদ্দিক লিংকন বলেন, ময়লা-আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধে যেমন পরিবেশ দূষিত হয়, তেমনি মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বাড়ছে।

শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিক খান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। শেরপুরে একটি আধুনিক ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণে উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভা যৌথভাবে আলাপ-আলোচনা চলছে। দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যার মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান করা হবে।

 

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment